প্রিয় বৃহত্তর দাউদকান্দিবাসী, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, বন্ধুমহল, ব্যবসায়িক বন্ধুগণ, আপনজন, আমার গ্রামবাসী, পৌরবাসী, আত্মীয় স্বজন, পরিচিত ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
আমার এই জীবনে রাজনীতি, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক কার্যক্রম ব্যবসা বানিজ্য ও বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনাদের মাঝে আমি বিচরণ করেছি। আমার এই চাল-চলন, কথাবার্তা, কাজে-কর্মে, আচার-আচরনে অনেকেই কষ্ট পেয়ে থাকতে পারেন। আমি আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা চাচ্ছি, আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
আমি অসুস্থ, আমার ওপেন হার্ট সার্জারি হবে। কয়েকদিনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হবো। আমি অনেকদিন রাজনীতি থেকে দূরে। সে জন্যে অনেকের সাথে দেখা ও কথা হয়না অনেক দিন। আমি জানিনা আপনাদের সাথে দেখা করতে পারবো কিনা। আমার কোন আচরণে আপনারা নূন্যতম কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
এই কথাগুলো মরহুম আবদুস সাত্তার ভাই আপনাদের নিকট বলতে চেয়েছিলেন। মৃত্যুর ১০/১২ দিন আগের কথা। আমি বাসা থেকে বের হইছি। সাত্তার ভাই আমাকে ডাক দিয়ে বলেন, নাতি এখানে আয়। আমি চেয়ার টান দিয়ে পাশে গিয়ে বসি। ওনি আমাকে বলে। নাতি অনেক কথা বলেছি। কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিছ।
এটা শোনার সাথে সাথে আমার ভিতরে কামড় মেরে উঠে। আমি ওনাকে বুকে জড়িয়ে ধরি আর বলি। নানা তুমি কী বলো? তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর তোমার কিছু হবেনা, ইনশাআল্লাহ। আমরা সবাই তোমার জন্য দোয়া করিব।
তিনি বললেন, নাতি আমি দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি। অনেক মানুষের সাথে চলাফেরা করেছি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাইতে চাই। ফেসবুকে স্টেটাস দিবো। একটা লেখা লেখ। আমি বললাম, নানা আজকে না। যেদিন হাসপাতালে যাবেন সেদিন দিবো। নানা বললেন, ঠিকআছে সুন্দর করে দিতে হবে। আমি ওকে, বলে বিদায় নিয়ে বের হলাম।
এই কয়েকদিন দেখলাম ওনার পরিচিত বিভিন্ন লোকের নিকট ক্ষমা চাচ্ছেন। দোয়া চাচ্ছেন। আহ্ সাত্তার নানা ভাই, আপনি হয়তো আপনার রবের ফায়সালা বুঝতে পেরেছিলেন। মানুষ নাকি তার মৃত্যুর খবর ৪০দিন আগেই জানতে পারে। আপনিও হয়তো জানতে পেরেছিলেন। তাইতো ক্ষমা চাওয়ার আকুলতা ছিলো আপনার।
ওই দিনের পর থেকে আমি আপনাকে বেশি সময় দিতে পারিনি। হঠাৎ শুক্রবার আপনি অসুস্থ হলেন। শোনা মাত্র আপনার জন্য ফেসবুকে দোয়া চেয়ে পোস্ট করি। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে, আপনি এই দুনিয়ার পথ অতিক্রম করেছেন।
নানা ভাই, আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। আপনার সাথে কত সময় পার করছি। আমার সন্তানরা আপনার জন্য পাগল ছিলো। আজ দুই দিন আপনাকে পাই না। তাই, বাসায় গিয়েও ভালো লাগে না। বাহিরেই বেশি সময় কাটাই। আপনার অনেক স্মৃতি আমার সাথে শেয়ার করতেন।
ভাই, আপনি বড় কষ্ট বহন করে চলতেন। অপেক্ষা করেছিলেন, কষ্টটি কবে লাগব হবে। না বলা, সেই কষ্ট বহন করে চলে গেলেন দুনিয়া থেকে। মহান আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুক, জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক, আমিন।
শরীফ প্রধান
২০.০৭.২০২৫
আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, বন্ধু, পরিচিত আপনজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন
- আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৯:৪২:১২ অপরাহ্ন
