বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
বুধবার ২৫ জুন ২০২৫ ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দাউদকান্দিতে ধানসিঁড়ি সমাজ কল্যানের উদ্যোগে ময়লার ভাগাড় পরিচ্ছন্নতা অভিযান তারেক রহমান: গণতান্ত্রিক চেতনায় নেতৃত্বের নতুন প্রতীক ডেঙ্গুর হটস্পট দাউদকান্দিতে জামায়াতের উদ্যোগে মশা নিধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত বাগেরহাটের চিতলমারী কলাতলা ইউনিয়ন উন্নয়ন ফোরামের কমিটি গঠন শব্দটা ‘সাংবাদিক’ না ‘রিপোর্টার’? জানতে পড়ুন শিক্ষার মান উন্নয়নে ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অবদান স্বরণীয় হয়ে থাকবে : খন্দকার মারুফ দাউদকান্দিতে কৃষকদের নিয়ে পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত দাউদকান্দিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, ডেঙ্গু পরিক্ষা ও ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠিত দাউদকান্দিতে নিরাপদ খাদ্য সচেতনতায় ব্যবসায়ী ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত বাবা দিবস উপলক্ষে আউটস্ট্যান্ডিং ফাদার অ্যাওয়ার্ড প্রদান দাউদকান্দিতে ডেঙ্গু সচেতনতায় ধানসিঁড়ি সমাজ কল্যান পরিষদের অভিযান কোটি টাকার রাজস্বের ইলিয়টগঞ্জ বাজারের উন্নয়নের দাবীতে প্রতিবাদ ব্যাচ ভিত্তিক বন্ধুদের সংগঠন ঠিকানা-দুই হাজার পাঁচ এর পথচলা শুরু ২৭ বছর পর জুরানপুর আদর্শ কলেজের ৯৮ ব্যাচের মিলনমেলা দাউদকান্দি পাবলিকিয়ান স্টুডেন্ট'স এসোসিয়েশনের ঈদ পুনর্মিলন ও নৌকা ভ্রমণ দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২৫টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের জন্য কাজ করতে হবে: নূর মোহাম্মদ সেলিম আমাদের শিক্ষার্থীদের ভালো লেখাপড়ার জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি: ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন রাজধানীর কাকরাইলে লিগ্যাল কনস্যুলেট ল' ফার্মের উদ্বোধন শহীদ জিয়াউর রহমান আমার রাজনৈতিক আদর্শ: সালাউদ্দিন ভূঁইয়া

“গনির দুর্ভিক্ষ” -একটি শিক্ষামূলক গল্প

“গনির দুর্ভিক্ষ” -একটি শিক্ষামূলক গল্প
"পবনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদেরের একমাত্র ছেলে গনি মিয়া। ছেলেবেলা থেকেই সে মাটির গন্ধ ভালোবাসত। বাবা যখন হাল ধরতেন, সে ছোট্ট হাতে লাঙ্গলের ফলা ধরে রাখার চেষ্টা করত। ধীরে ধীরে সে বড় হলো, আর বাবার মতোই একদিন কৃষক হয়ে উঠল।

গনির চোখে স্বপ্ন ছিল—সবুজ শস্যে ভরে উঠবে তার মাঠ, তার ফসল বিক্রি করে একদিন পবনপুরের সবচেয়ে সফল কৃষক হবে। দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করত সে। সারাদিন মাঠে কাজ করে সন্ধ্যায় যেত পার্শ্ববর্তী হাটে, ফসল বিক্রি করত।

সে কখনো বিলাসী জীবন চায়নি, শুধু চেয়েছিল তার মাটি, তার ফসল, আর এক সুখের সংসার। গনির হাটে যাওয়া-আসার পথে একদিন দেখা হয় রোজির সঙ্গে। রোজি ছিল তার প্রতিবেশী গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। মেয়েটি ছিল চঞ্চল, হাসিখুশি, প্রাণবন্ত।

প্রথমবার দেখা হওয়ার পর থেকেই দুজনের মধ্যে এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরি হয়। প্রতিদিন দেখা হতো, কথা হতো। গনি বুঝতে পারল, সে রোজিকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই সব বদলে গেল। খবর এলো, রোজির বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্যত্র।

গনি কিছুই করতে পারল না। সমাজ, পরিবার—সব মিলিয়ে এ যেন এক অদৃশ্য দেয়াল, যা তাদের আলাদা করে দিল। বিয়ের দিন গনি দূর থেকে দেখল, তার ভালোবাসার মানুষ অন্য কারও ঘর আলো করতে যাচ্ছে। এই আঘাত সে সহ্য করতে পারল না। তার হাত থেকে হালের লাঙ্গল পড়ে গেল, পায়ে শক্তি হারিয়ে গেল।

সে আর জমিতে গেল না, আর ফসল ফলাল না। তার শূন্য হৃদয়ের মতোই জমিগুলো অনাবাদী রয়ে গেল। গনির দুঃখ যেন পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তার চাষ না করায় গ্রামে খাদ্যের সংকট দেখা দিল। কারন হল, গ্রামের বেশিরভাগ জমিই গনি একা চাষাবাদ করত।

বছর কয়েকের মধ‍্যে পবনপুর গ্রামে দুর্ভিক্ষ নেমে এলো। দিন যেতে লাগল, পবনপুরের মানুষ অনাহারে দিন কাটাতে লাগল। আর গনি হয়ে গেল নিঃসঙ্গ, হতাশ, ভগ্নহৃদয় এক মানুষ। একদিন হঠাৎ রোজি ফিরে এলো গ্রামে। সে দেখল, তার একসময়ের প্রেমিক আজ যেন কঙ্কালসার হয়ে গেছে।

তার চোখে আর সেই উজ্জ্বলতা নেই, হাতে নেই হালের লাঙ্গল, মাঠজুড়ে শুধুই অনাবাদী ধুলোবালি। পাড়াজুড়ে হাহাকার! রোজি গনির সামনে এসে দাঁড়াল। বলল, “গনি, তুমি কি জানো, তুমি শুধু নিজের জীবন নয়, পুরো গ্রামটাকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছ? এই মাটি তোমার ভালোবাসার ছিল, তুমি কি তাকে এভাবে অবহেলা করতে পারো?” গনি কিছু বলল না, শুধু নীরবে শুনল।

রোজি আবার বলল, “তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে এই মাটির জন্য কিছু করো। হাল ধরো, জমিতে চাষ করো। পবনপুরকে দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচাও।” গনির চোখের কোণে পানি এলো। সে বুঝতে পারল, তার আসল ভালোবাসা ফসল, প্রকৃতি, তার গ্রামের মানুষ।

সে আবার মাঠে ফিরে গেল। শুরু করল নতুন করে চাষাবাদ। কয়েক মাসের মধ্যেই তার জমি সবুজ হয়ে উঠল, পবনপুরে ফিরে এলো প্রাণচাঞ্চল্য। দুর্ভিক্ষ দূর হলো, মানুষ আবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।

“গনির দুর্ভিক্ষ”—একটি শিক্ষার গল্প এই ঘটনার পর থেকে পবনপুরের মানুষ একটি শিক্ষা নিল— প্রেম শুধু একজন মানুষের প্রতি নয়, প্রেম হতে পারে প্রকৃতির প্রতি, মাটির প্রতি, গাছের প্রতি, প্রাণের প্রতি। গ্রামের তরুণ-তরুণীরা এখন আর কারও প্রেমে পড়ে না, তারা প্রেমে পড়ে ফসলের সাথে, গাছের সাথে, পুকুরের মাছের সাথে, গোয়াল ভরা গবাদিপশুর সাথে।

আজও যদি কেউ পবনপুর গ্রামে যায়, গ্রামের প্রবেশদ্বারে দেখতে পাবে একটি সাইনবোর্ড— “গনির দুর্ভিক্ষ” এই নাম শুনে সবাই ভাবে, এটি হয়তো একসময়কার ভয়াবহ খাদ্য সংকটের কথা। কিন্তু আসলে এটি এক হারিয়ে যাওয়া প্রেমের গল্প, যা শিখিয়ে গেছে প্রকৃত ভালোবাসা কী।

লেখক: মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন
শাখা ব্যবস্থাপক
জনতা ব্যাংক, দাউদকান্দি শাখা।
দাউদকান্দিতে ধানসিঁড়ি সমাজ কল্যানের উদ্যোগে  ময়লার ভাগাড় পরিচ্ছন্নতা অভিযান

দাউদকান্দিতে ধানসিঁড়ি সমাজ কল্যানের উদ্যোগে ময়লার ভাগাড় পরিচ্ছন্নতা অভিযান